পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮

২০ লাখ টাকা চাঁদার জন্য ছাত্রলীগ নেতা রনির ‘গুণ্ডামি’ (ভিডিও)

...
চট্টগ্রামে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতকারী সেই ছাত্রলীগ নেতা মো. নুরুল আজিম রনির আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ইউনিএইড নামে একটি কোচিং সেন্টারের চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ মিয়াকে (৩৮) তার অফিসে চড়, থাপ্পড় মারতে দেখা গেছে।২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে রাশেদ মিয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগও উঠেছে রনির বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়া বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পাঁচলাইশ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত নুরুল আজিম রনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাশেদ মিয়ার পক্ষ থেকে রনি ও তার সহযোগী নোমানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের সত্যতা পরিবর্তন ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ।
ওসি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ইউনিএইড নামে একটি কোচিং সেন্টারের চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ মিয়া নুরুল আজিম রনি ও নোমান চৌধুরী রাকিবের নামে একটি অভিযোগ জমা দিয়ে গেছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।

এর আগে চলতি বছরের ৩১ মার্চ চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ড. জাহেদ খানকে তার অফিস কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা রনির প্রকাশ্যে কিল-ঘুসি মেরে লাঞ্ছিত করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো।
চট্টগ্রামের এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে নির্বাচনে অস্ত্রবাজি করারও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় তিনি গ্রেফতার হয়ে কারাবাসও করেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) পাঁচলাইশ মডেল থানায় দায়ের করা এজাহারে বাদি ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ মিয়া অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি ও নোমান চৌধুরী রাকিব জোর পূর্বক বাদির অফিস ব্যবহার করতেন। বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে অনুষ্ঠানের কথা বলে জোরপূর্বক টাকা পয়সা নিয়ে যেতো।

রাশেদ মিয়া তার অভিযোগে দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে পালিয়ে অফিস-বাসা যাতায়াত করছিলেন। কিন্তু ১৩ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে মুরাদপুরের মাজার এলাকা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রনির মুরাদপুরস্থ এলুমিনিয়াম গলির বুড়ি পুকুর পাড়ে।  সেখানে তাকে চাঁদার ওই ২০ লাখ টাকার দাবিতে বেদম মারধর করা হয়।

রাশেদ মিয়ার অভিযোগ, টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে বলা হয়, হয় টাকা দিবি, নয় জানে মেরে ফেলবো। এ সময় হকিস্টিক দিয়ে মাথায় বাড়ি দিলে মাথা সরিয়ে নেয়। কিন্তু বাম কানে আঘাত লেগে এখন ওই কানে কিছুই শুনেন না তিনি।

পরে সেখান থেকে রাত সাড়ে এগারটার দিকে রাশেদের সুগন্ধা আবাসিক এলাকার বাসায় নিয়ে গিয়ে রনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৩৫ হাজার টাকা ও তার (রাশেদ) এবং তার স্ত্রীর পাসপোর্ট নিয়ে আসে।
ফেরার সময় রাশেদকে তুলে নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের পাশে ফেলে যায় বলেও এজাহারে দাবি করেন রাশেদ।
ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ মিয়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবর্তন ডটকমকে ফোনে বলেন, আমি দীর্ঘদিন রনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গের অত্যাচারে জর্জরিত।
রনি চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাই মুখ বুঝে সব সহ্য করে আসছিলাম। কিন্তু এখন একসাথে ২০ লাখ টাকার চাঁদা দেয়া এবং আমাকে মারধর করার ঘটনা সহ্যের বাইরে চলে গেছে। বিশেষ করে আমি তাদের মারের কারণে বর্তমানে আমার বাম কানে শুনতে পাইনা।
তাই আমি বাধ্য হয়েছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন